চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ইতিহাস
১৮৭০ সালে গ্রাম চৌকিদারি আইন পাসের মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলে এক স্তর বিশিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়।
১৮১৭ সালে তৎকালীন ব্রীটিশ লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে জেলা বোর্ড সেস কমিটি বিল উত্থাপিত হয় এবং ঐ বছরেই তা আইনে পরিণত হয়। এ আইনের অধীনে প্রতিটি জেলায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে জেলা বোর্ড সেস কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটির প্রধান কাজ ছিল করের হার নির্ধারণ, কর আদায় এবং রাস্তাঘাট নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় মেরামত কাজে অর্থ ব্যয় করা। ১৮৭১ সালে দশম বেঙ্গল অ্যাক্ট- এর অধীনে একটি বোর্ড কমিটি গঠিত হয় এবং ১৮৭১ সাল হতে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত এ কমিটির অস্তিত্ব ছিল। স্থানীয় সরকার গঠনের (এটাই) ছিল প্রাথমিক পদক্ষেপ।
সেস কমিটির অভিজ্ঞতার আলোকে ১৮৮৫ সালে লোকাল সেলফ গভর্মেন্ট অ্যাক্ট প্রণীত হয় এবংবোর্ড সেস কমিটির বদলে জেলা বোর্ডের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সরকার গঠনে এ অ্যাক্টই উপমহাদেশে যুগান্তকারী অবদান রাখে।
১৮৮৫ সালে লোকাল সেলফ গভর্মেন্ট অ্যাক্ট বলে তৎকালীন বাংলার ১৬টি জেলায় ড্রিস্ট্রিক বোর্ড গঠিত হয়। যথা : ঢাকা, চব্বিশ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, যশোর, খুলনা, হুগলী, হাওড়া, বর্ধমান, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, ফরিদপুর, পাবনা ও পাটনা। ঢাকা জেলা পরিষদ ১৮৮৬ সালে সৃষ্টি হয়। ১৮৮৬ সালের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ১৯২০ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ড্রিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট পদাধিকার বলে ড্রিস্ট্রিক বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হতেন। ১৯৩৬ সালে লোকাল সেলফ গভার্মেন্ট অ্যাক্ট- এর সংশোধিত আইনে লোকাল বোর্ডের বিলুপ্তি ঘটে। পরবর্তী পর্যায়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান নিযুক্তির মাধমে ডিস্ট্রিক বোর্ড জনপ্রতিনিধিত্বশীল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ লাভ করে এবং এ ধারা ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকে।
১৯৫৯ সালে মৌলিক গণতন্ত্র আদেশের অধীনে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডকে নতুন আঙ্গিকে পরিণত করে ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল নামকরণ করা হয়। এ ব্যবস্থায় ১৯৬৩ সালে জেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বিতীয় এবং সর্বশেষ ১৯৬৬ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালে নির্বাচন পরিষদ ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসাবে জেলা প্রশাসককে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড এর প্রশাসনিক করে ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের যাবতীয় কার্যাবলী পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা অর্পণ করা হয় এবং ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের স্থলে জেলা বোর্ড নামকরণ করা হয়। ১৯৭৬ সালে স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে জেলা বোর্ডের নামকরণ করা হয় জেলা পরিষদ।
স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ) আইন, ১৯৮৮ এর ধারা ৪(১).অনুযায়ী প্রতিনিধি সদস্য, মনোনীত সদস্য, মহিলা সদস্য এবং কর্মকর্তা সদস্যগনের সমন্বয়ে জেলা পরিষদ গঠন করা হয়।
জেলা পরিষদ আইন, ২০০০-এ পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিতে ১ জন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য এবং সংরক্ষিত আসনের ৫জন মহিলা সদস্য সমন্বয়ে পরিষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।
জেলা পরিষদ আইনে উপসচিব পদমর্যাদার একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার একজন সচিব প্রেষণে পরিষদে ন্যস্ত রাখার বিধান আছে।